নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীসহ সারাদেশে হঠাৎ করেই বাড়তে শুরু করেছে কুয়াশার দাপট। জলীয়বাষ্প জমে ভারী হয়ে বৃষ্টির মতোই কুয়াশা ঝরছে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে। আবহাওয়াদিরা বলছেন, এই বৃষ্টির উৎস মেঘ নয়, ভারী কুয়াশা। স্বল্প আয়ের মানুষের ভোগান্তির সীমা নেই। ফুটপাতে থাকা মানুষের অবস্থা সবচেয়ে খারাপ। বাড়ছে শীতজনিত কারণে বৃদ্ধ ও শিশুদের রোগ-ব্যাধি। আবহাওয়ার পূর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৮ ঘণ্টায় কুয়াশার সঙ্গে হালকা বৃষ্টি অব্যাহত থাকতে পারে।
প্রতিবেশী দেশ ভারতের দিল্লি থেকে বিহার, পশ্চিমবঙ্গ ও পূর্বাঞ্চলের সাত রাজ্য হয়ে ঘন কুয়াশার আস্তরণটি বাংলাদেশ হয়ে পাকিস্তানের লাহোর-করাচি হয়ে চীন এবং খাজাকাস্তান পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। বাতাসে জলীয়বাষ্প জমে ভারী হয়ে তা বৃষ্টির মতো ঝরছে। ভারতের আবহাওয়া দপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, কুয়াশার কারণে ভারতের বেশির ভাগ বিমানবন্দরে উড্ডয়ন কার্যক্রম প্রায় পাঁচ ঘণ্টা বন্ধ ছিল। গত পাঁচ বছরের মধ্যে এবার এশিয়ার দেশগুলোতে সর্বোচ্চ পরিমাণে কুয়াশা পড়তে দেখা যাচ্ছে।
এদিকে গতরাত থেকে কুয়াশার চাদরে মোড়ানো ছিল ঢাকা শহর।
অন্যদিকে ঘন কুয়াশায় মঙ্গলবার (৮ ডিসেম্বর) মধ্যরাত থেকে কয়েক দফায় বঙ্গবন্ধু সেতুর টোল আদায় বন্ধ রাখা হয়। এতে সেতুর ওপর যানবাহনের চাপ কমানো হয়।
সেতু কর্তৃপক্ষ জানায়, ঘন কুয়াশার কারণে দৃষ্টিসীমা কমে যাওয়ায় দুর্ঘটনা এড়াতে এই পদক্ষেপ নেওয়া হয়। কুয়াশায় যানবাহন ধীরে চলায় সেতুর ওপর এবং টোল বন্ধ করে দেওয়ায় সেতুর এক প্রান্ত ঢাকা-টাঙ্গাইল-বঙ্গবন্ধু সেতু মহাসড়ক ও অপরপ্রান্ত সিরাজগঞ্জের সেতু পশ্চিম সড়কে যানবাহনের দীর্ঘ সারি পড়ে যায়।
ভোরে সূর্য উঠার পর কুয়াশা কিছুটা কেটে গেলে যান চলাচল স্বাভাবিক হতে শুরু হয় বলে জানায় কর্তৃপক্ষ। তবে উভয়প্রান্তে যানবাহনের দীর্ঘ সারি রয়েছে। দীর্ঘ যানজটে পড়ে যাত্রী ও চালকদের ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে।
আবহাওয়া অধিদপ্তরের আবহাওয়ার পূর্বাভাসে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে আসছে শৈত্যপ্রবাহ।
সাধারণত ১০ ডিগ্রি সেলসিয়াসের নিচে তাপমাত্রা থাকলে শৈত্যপ্রবাহ বলা হয়। যদিও ঘন কুয়াশা আর ঠান্ডা বাতাসে জনজীবনে নেমে এসেছে শৈত্যপ্রবাহের মতো অনুভূতি।
এদিকে ডিসেম্বরে বঙ্গোপসাগরে এক থেকে দুইটি নিম্নচাপ তৈরি হতে পারে। এর মধ্যে একটি ঘূর্ণিঝড়ে পরিণত হওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। মাসের শেষের দিকে দেশের উত্তরাঞ্চল, উত্তর-পশ্চিমাঞ্চল ও মধ্যাঞ্চলে এক থেকে দুটি মৃদু শৈত্যপ্রবাহ হতে পারে।
শৈত্যপ্রবাহের সময় দেশের ওই এলাকাগুলোর সর্বনিম্ন তাপমাত্রা ছয় থেকে আট ডিগ্রি সেলসিয়াসে নেমে আসতে পারে।