নিজস্ব প্রতিবেদক:
যাবজ্জীবনের সাজা আমৃত্যু কারাদণ্ড নাকি ৩০ বছর, এ সংক্রান্ত রিভিউ আবেদনের শুনানি শেষে প্রধান বিচারপতি সৈয়দ মাহমুদ হোসেনসহ সাত বিচারপতির আপিল বেঞ্চ মঙ্গলবার যাবজ্জীবনের সাজা ৩০ বছরের কারাবাস বলে রায় দিয়েছেন। তবে ক্ষেত্রবিশেষে এ সাজা আমৃত্যু কারাবাস বিবেচিত হতে পারে।
তবে ৩০ বছরের সাজার বিষয়টি আন্তর্জাতিক অপরাধ ট্রাইবুনালের মামলায় কাযর্কর হবে না বলে আপিল বিভাগ আদেশ দিয়েছে বলে জানান অ্যাটর্নি জেনারেল।
অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন বলেন, যাবজ্জীবন মানে ৩০ বছরের কারাদণ্ড। তবে আদালত যদি আমৃত্যু সাজা দেয় তাহলে সেটাই গণ্য করতে হবে উল্লেখ করে রিভিউ রায় দিয়েছে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
রিভিউ আবেদনের পক্ষে শুনানি করা জ্যেষ্ঠ আইনজীবী খন্দকার মাহবুব হোসেন বলেন, ‘আপিল কয়েকটি রায় যাবজ্জীবন কতদিন থাকবে, কতদিন একজন আসামির ভোগ করতে হবে, এ ব্যাপারে দ্বিধাদ্বন্দ্ব ছিল। আমরা সে ব্যাপারে রিভিউ পিটিশন করেছিলাম এবং আমরা বলেছিলাম, যাবজ্জীবন বর্তমান আইনের বিধান অনুযায়ী ৩০ বছর হবে।
কারণ ৩০ বছর যদি না হয়, ফৌজদারি কার্যবিধির ৩৫ (ক) সহ আইনের অন্য বিধান এবং জেল কোড এগুলো সব বাতিল হয়ে যাবে।
‘আজকের রায়ে আপিল বিভাগ বলেছে, যদিও যাবজ্জীবন বলতে একজন মানুষের স্বাভাবিক জীবন যতদিন, ততদিন। কিন্তু আইন অনুযায়ী একজন যাবজ্জীবন আসামির ৩০ বছরের সাজা ভোগ করতে হবে। সে ক্ষেত্রে আইনের অন্যান্য রেয়াত যেগুলো আছে যদি না আদালত বিশেষভাবে আদেশ দেন আমৃত্যু জেলখানায় থাকতে হবে। এ রায়ে আমরা মোটামুটি সন্তুষ্ট।’
মামলার বিবরণ থেকে জানা যায়, ২০০১ সালে সাভারে জামান নামের এক ব্যক্তিকে হত্যা মামলায় আতাউর মৃধাসহ দুই আসামিকে মৃত্যুদণ্ড দিয়ে ২০০৩ সালের ১৫ অক্টোবর রায় দেন দ্রুত বিচার ট্রাইব্যুনাল। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা হাইকোর্টে আপিল করেন।
শুনানি নিয়ে ২০০৭ সালের ৩০ অক্টোবর রায়ে হাইকোর্ট দুজনের মৃত্যুদণ্ড বহাল রাখেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আসামিরা আবারও আপিল করেন।
২০১৭ সালের ১৪ ফেব্রুয়ারি আপিল বিভাগের দেয়া রায়ে দুই আসামির মৃত্যুদণ্ড কমিয়ে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দেওয়া হয়। একই সঙ্গে আদালত যাবজ্জীবন মানে আমৃত্যু কারাবাসসহ সাত দফা অভিমত দেয়।
এরপর আসামি আতাউর আপিল বিভাগের অভিমত রিভিউয়ের জন্য আবেদন করেন। ওই আবেদনের চুড়ান্ত শুনানি গত মঙ্গলবার শেষ হয়।