আন্তর্জাতিক ডেস্ক:
পাকিস্তানের পেশোয়ারে একটি মাদ্রাসায় শক্তিশালী বোমা হামলায় অন্তত ৭ জন নিহত হয়েছে। এ হামলায় আহত হন ৭০ জনেরও বেশি। হতাহতের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু বলে খবর প্রকাশ করেছে সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা।
মঙ্গলবার (২৭ অক্টোবর) স্থানীয় সময় সকাল সাড়ে ৮টার দিকে স্পেন জামায়াত মসজিদ, যা স্থানীয় শিশুদের জন্য একটি ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠান হিসেবে ব্যবহার করা হয় সেখানে এ বিস্ফোরণ ঘটে।
এ ধর্মীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে আত্মঘাতী হামলা হয়নি বলে স্থানীয় প্রশাসন প্রাথমিকভাবে ধারণা করছে। কারণ সেখানে একটি ব্যাগ ভর্তি বিস্ফোরক কেউ রেখেছিল বলে ধারণা করা হচ্ছে।
পুলিশ জানায়, বিস্ফোরণে ভবনটির সামনের অংশ পুরোপুরি ধসে পড়েছে। বিভিন্ন স্থানে শুধু ধ্বংসযজ্ঞের ক্ষতচিহ্ন। কান্নায় ভারী হয়ে উঠেছে আশপাশ। ঘটনাস্থলে পৌঁছেছে নিরাপত্তা বাহিনীর সদস্যরা।
পুলিশ জানিয়েছে, এ দিন সকালে মাদ্রাসাটি ক্লাস শুরু হয়। কোরানের ক্লাস হওয়ার সময় এক ব্যক্তি ওই ক্লাস ঘরে ঢোকে। তার হাতে একটি ব্যাগ ছিল। বিস্ফোরণেরকিছুক্ষণ আগে ব্যাগটি রেখে সে ক্লাস থেকে বেরিয়ে যায়। কিছুক্ষণের মধ্যেই বিস্ফোরণ হয়। বিস্ফোরণের তীব্রতায় ক্লাসের ছাদ উড়ে গিয়েছে। মাদ্রাসাটি একাংশ ভেঙে গিয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে উদ্ধারকর্মীরা চারজন ছাত্রের মৃতদেহ উদ্ধার করেছে। অন্তত ৩৪ জন আহত অবস্থায় উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। নিহতের সংখ্যা বাড়তে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।
এখনো পর্যন্ত কোনো জঙ্গি গোষ্ঠী এই বিস্ফোরণের দায় স্বীকার করেনি। এলাকায় তুমুল উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। বস্তুত, বহু দিন পরে পেশোয়ারে এত বড় বিস্ফোরণ ঘটল। মৃত্যু হলো স্কুলের ছাত্রদের।
এক সময় পেশোয়ারে নিয়মিত নাশকতামূলক ঘটনা ঘটতো। তালেবানের শক্ত ঘাঁটি ছিল পাকিস্তানের এই অঞ্চল। ইসলামাবাদ থেকে ১৭০ কিলোমিটার দূরের এই শহর নিয়ে দীর্ঘদিন চিন্তিত ছিল পাক প্রশাসন।
২০১৪ সালের ডিসেম্বরে পেশোয়ারের একটি স্কুলে বিস্ফোরণ ঘটায় তালেবান। প্রায় ১৫০ ছাত্র নিহত হয়। তারপরেই পাক সেনা দেশ জুড়ে অপারেশন চালায়। আফগান সীমান্তে বেশ কিছু জঙ্গি শিবির ধ্বংস করা হয়। তারপর থেকে নিত্যনৈমিত্তিক উত্তেজনা খানিকটা প্রশমিত হয়।
তবে এ বিস্ফোরণ ফের নতুন বিপদের আশঙ্কা তৈরি করল।
আল জাজিরা/এসজি/জিএইচ (রয়টার্স)