নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজধানীর আদাবরে মাইন্ড এইড হাসপাতালে জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (এএসপি) আনিসুল করিমের মৃত্যুকে একটি পরিকল্পিত হত্যাকাণ্ড বলে দাবি করেছে পুলিশ।
দুপুরে তেজগাঁও বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার (ডিসি) মোহাম্মদ হারুন অর রশীদ এক সংবাদ সম্মেলনে জানান, মৃত্যুর আগে তিনি হাসপাতালে বসেই সকালের নাস্তা করেছেন। এরপর ওয়াশরুমে যেতে চাইলে হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয় এএসপি আনিসুলকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়ার কথা বলে ২ তলায় ডেকে নিয়ে যায়। পরে সেখানেই এক রুমে মারধর করা হয় আনিসুলকে। এতে ঘটনাস্থলেই তার মৃত্যু হয়।
তিনি জানান, আনিসুলকে ওয়াশরুমে নিয়ে যাওয়ার সময় তার বোন উম্মে সালমা সঙ্গে যেতে চাইলে হাসপাতালের মার্কেটিং ম্যানেজার আরিফ মাহমুদ জয় এবং অপর কর্মচারী রেদোয়ান সাব্বির তাকে বাধা দেয়। তারা ওপরে যাওয়ার কলাপসিবল গেটটিও আটকিয়ে দেয়।
এর কিছুক্ষণ পর আনুমানিক ১২টার দিকে আরিফ মাহমুদ তার বোনকে ওপরে ডাকে। তখন পরিবারের সকল সদস্য ওপরে গিয়ে আনিসুলকে নিস্তেজ অবস্থায় পড়ে থাকতে দেখে। এরপর তাকে দ্রুত জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউটে নিয়ে যায়। সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক ১২টা ৫৮ মিনিটে তাকে মৃত্য ঘোষণা করেন।
উপ-পুলিশ কমিশনার হারুন অর রশীদ আরও জানান, এই ঘটনায় আদাবর থানায় হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। হাসপাতালের সিসিটিভি ফুটেজে দেখা যায়, বেলা ১১টা ৪৫ মিনিটে আনিসুল করিম শিপনকে আসামিরা মারতে মারতে ২য় তলার একটি কক্ষে ঢুকায়। সেখানে তাকে মাটিতে ফেলে চেপে ধরে হাটু দিয়ে পিঠের ওপরে চেপে বসে। কয়েকজন ওড়না দিয়ে শিপনকে বাঁধে। কয়েকজন কনুই দিয়ে ঘাড়ের পিছনে ও মাথায় আঘাত করে। কয়েকজন কিল-ঘুষি মারে।
ডিসি বলেন, আসামিরা পরিকল্পিতভাবে মারপিট করে আনিসুলকে হত্যা করেছে। এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত ১০ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। তারা সবাই পুলিশের কাছে হত্যার দায স্বীকার করছে।
তিনি বলেন, জাতীয় মানসিক হাসপাতাল থেকে হঠাৎ করে রোগীটা কীভাবে মাইন্ড এইড হাসপাতালে চলে গেল? এই দুই হাসপাতালের সঙ্গে কোনো দালাল জড়িত আছে কিনা, তা আমরা খতিয়ে দেখছি।
নিহত আনিসুল করিম শিপন ৩১তম বিসিএসে পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে নিয়োগ পান। সর্বশেষ তিনি বরিশাল মহানগর পুলিশে কর্মরত ছিলেন। তার বাড়ি গাজীপুরের কাপাসিয়ায়। তিনি এক সন্তানের জনক। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণরসায়ন ও অনুপ্রাণবিজ্ঞান বিভাগের ৩৩ ব্যাচের ছাত্র ছিলেন এই পুলিশ কর্মকর্তা।