নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি:
নারায়ণগঞ্জে সাত খুন মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামি নূর হোসেনকে অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড দিয়েছেন আদালত।
আজ বুধবার সকালে কড়া নিরাপত্তায় কাশিমপুর কারাগার থেকে নূর হোসেনকে নারায়ণগঞ্জের আদালতে আনা হয়। দুপুরে অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ সাবিনা ইয়াসমিনের আদালতে তাকে হাজির করা হলে আদালত আসামি নূর হোসেনকে অস্ত্র আইনের মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের এ আদেশ দেন।
একই সাথে একটি চাঁদাবাজির মামলা থেকে তাকে বেকসুর খালাস দেন আদালত।
এর সত্যতা নিশ্চিত করেন আদালতের অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর জাসমীন আহমদ।
তিনি বলেন, সাত খুনের পর নূর হোসেনের বৈধ অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল করে অস্ত্রগুলো জমা দিতে বলেন জেলা প্রশাসক। কিন্তু নূর হোসেন সেই অস্ত্রগুলো নির্ধারিত সময়ে জমা দেননি।
পরে পুলিশ রাজধানীর মালিবাগ এলাকায় অভিযান চালিয়ে অস্ত্র উদ্ধার করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করে। ওই মামলায় আদালত ছয় সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ করে যাবজ্জীবন সাজা দেন।
তিনি আরও বলেন, নূর হোসেনের বিরুদ্ধে একটি চাঁদাবাজি মামলায় অভিযোগ প্রমাণ না হওয়ায় তাকে খালাস প্রদান করেছেন। রায় ঘোষণার পর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
নারায়ণগঞ্জের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি সালাহ উদ্দিন জানান, ‘২০১৩ সালে নূর হোসেনকে আসামি করে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলাটি দায়ের করা হয়। মামলায় অভিযোগ আনা হয় নূর হোসেনের অস্ত্রের লাইসেন্স বাতিল হওয়ার পরও সেই অস্ত্র তিনি ব্যবহার করেন। আদালত এই মামলায় ৫ জন সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে আজ রায় দিয়েছেন।’
একই সাথে একটি চাঁদাবাজির মামলায় নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় আদালত তাকে বেকসুর খালাস দেন বলেও জানান তিনি।
উল্লেখ্য, ছয় মামলার মধ্যে ২০১৪ সালে সাত খুনের পর নূর হোসেনের সিদ্ধিরগঞ্জের বাড়িতে অভিযান চালিয়ে বেশ কয়েকটি অবৈধ অস্ত্র উদ্ধার করা হয়। এ ঘটনায় নূর হোসেনের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে তিনটি মামলা করে পুলিশ।
২০১৪ সালের ১২ জুন ২০ হাজার টাকা চাঁদা দাবির অভিযোগে অটোরিকশাচালক সাইদুল ইসলামের মামলায় নূর হোসেন, তার ভাই নূর উদ্দিন, তাদের ভাতিজা শাহজালাল বাদল, লোকমানসহ চারজনকে আসামি করা হয়।
শিমরাইলে নূর হোসেনের মাদক স্পট থেকে ২৯০০ বোতল ফেনসিডিল উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশের এসআই শওকত হোসেন বাদী হয়ে সিদ্ধিরগঞ্জ থানায় মামলা করেন।
সাত খুনের পর নূর হোসেনের বৈধ অস্ত্রটির লাইসেন্স বাতিল করে জেলা প্রশাসন। সেটি জমা দিতে বলা হয়। কিন্তু সেটি জমা না দিয়ে নূর হোসেন দেশের বাইরে পালিয়ে যান। এ ঘটনায় অস্ত্র আইনে আরেকটি মামলা হয়।